শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৩ পূর্বাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
ইমরান হোসেন,ঝালকাঠি :
সারাদেশে মতো ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলায় ভূমি ও গৃহহীনদের জন্য জমিসহ পাকা ঘর নির্মাণ করে দিয়েছে সরকার। সরকারি খাস জমি ও অবৈধ দখলে থাকা খাসজমি উদ্ধার করে ৪৭৭টি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এ উপজেলায় ২২ একর ৬৫ শতাংশ খাস জমি দখলমুক্ত করা হয়েছে। যার বাজার মূল্য দুই কোটি ৭৬ লাখ ৪০ হাজার ৯৯২ টাকা।
উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের যে সকল খাস জমি দখলমুক্ত করা হয়েছে, চেঁচরী রামপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ চেঁচরী মৌজায় ৯ একর ৯৬ শতাংশ, রামপুর মৌজায় ৭৩ শতাংশ এবং মহিষকান্দি মৌজায় ৮৬ শতাংশ। পাটিখালঘাটা ইউনিয়নে পূর্বজোড়খালী মৌজায় ২ একর। আমুয়া ইউনিয়নে আমুয়া মৌজায় ৪৬ শতাংশ, বাঁশবুনিয়া মৌজায় ১ একর ৭০ শতাংশ এবং ছোনাউটা মৌজায় ১ একর ২৩ শতাংশ। কাঠালিয়া সদর ইউনিয়নে আউরা মৌজায় ৫৬ শতাংশ ও পরে আরো ৩০ শতাংশ, আনইলবুনিয়া মৌজায় ১ একর ৮২ শতাংশ, দক্ষিণ আউরা মৌজায় ২ একর। শৌলজালিয়া ইউনিয়নে কচুয়া মৌজায় ২৮ শতাংশ ও দক্ষিণ শৌলজালিয়া মৌজায় ৬৩ শতাংশ। আওরাবুনিয়া ইউনিয়নে পূর্বছিটকী মৌজায় ১২ শতাংশ।
জানাযায়, মুজিব বর্ষ উপলক্ষে এসব জমিতে গরিব ভূমি ও গৃহহীনদের জন্য আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর নির্মাণ করা হয়। এ উপজেলা ইতিমধ্যে দুই ধাপের ২১০ টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। তৃতীয় ধাপের ৯০টি ঘর এ মাসেই হস্তান্তরের কথা রয়েছে।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের পশ্চিম আউরা আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দা নব মুসলিম আবু বকর সিদ্দিক বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে এখন শান্তিতে বসবাস করতে পারছি। নিজের স্থায়ী একটা ঠিকানা হয়েছে।
কাঠালিয়া সদর ইউনিয়নের চিংড়াখালী গ্রামের ভিক্ষুক আমেনা বেগম বলেন, ‘অন্যের জমিতে থাইক্কা খয়রাত (ভিক্ষা) কইরা খাই। কোন দিনও পাকা ঘরে থাকমু এরহম আশা করি নায়। প্রধানমন্ত্রী ঘর উপহার দেওয়ায় এখন শান্তিতে থাকতে পারি।
আমুয়া ইউনিয়নের বাঁশবুনিয়া গ্রামে আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরের বাসিন্দা আমেনা বেগম বলেন, সরকার জমিসহ পাকা ঘর দিয়েছেন। এর আগে নিজের কোন জমি ও ঘর ছিলো না। এখন অনেক ভালো আছি। তাই প্রধানমন্ত্রীকে অনেক ধন্যবাদ জানাই।
আমুয়া ইউনিয়নের বাঁশবুনিয়া ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নকিরুল ইসলামের ভষ্য, তার এলাকার খাস জমি বেদখল ও পরিত্যাক্ত ছিল। ইউএনও যেসব জমি উদ্ধার করে অসহায় মানুষকে ঘর নির্মাণ করে দিয়ে মহৎ কাজ করেছেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আহম্মেদুর রহমান বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভ’মিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল মানুষের জন্য পাকা ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেন প্রধানমন্ত্রী। প্রথম পর্যায়ে প্রতিটি এক লাখ ৭০ হাজার টাকা ব্যয়ে ৫০টি, দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রতিটি এক লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ে ৩২৮টি ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। তৃতীয় পর্যায়ে প্রতিটি দুই লাখ ৪০ হাজার টাকা ব্যয়ে ৯৯টি ঘর নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।
কাঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুফল চন্দ্র গোলদার বলেন, এখানে যোগদানের পর আশ্রায়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের কাজ আসে। কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নে জমির সংকট ছিল। পরে বেদখল ও পরিত্যক্ত খাস জমি উদ্ধার করা হয়। এই জমিতে ৪৭৭টি পাকা ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়। বর্তমানে বাকি খাস জমি উদ্ধারের কাজ চলছে।